ডুচেন মস্কুলার ডিসট্রফি (DMD) রোগীর জন্য ফিজিওথেরাপি

Table of Contents

ডুচেন মস্কুলার ডিসট্রফি (DMD) রোগীর জন্য ফিজিওথেরাপি:

একটি পূর্ণাঙ্গ গাইড

ডুচেন মস্কুলার ডিসট্রফি (Duchenne Muscular Dystrophy – DMD) একটি জিনগত রোগ যা পেশির ক্রমাগত দুর্বলতা এবং ক্ষতির কারণ হয়। এটি প্রধানত শিশুদের (বিশেষ করে ছেলেদের) মধ্যে দেখা যায় এবং সময়ের সাথে সাথে রোগীর চলাচলের ক্ষমতা প্রভাবিত করে। ফিজিওথেরাপি DMD রোগীদের জীবনের মান উন্নত করতে এবং শারীরিক কার্যক্ষমতা ধরে রাখতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।


DMD রোগীদের জন্য ফিজিওথেরাপির লক্ষ্য:

  1. পেশির শক্তি এবং নমনীয়তা বজায় রাখা।
  2. পেশির টান (Contracture) এবং জয়েন্টের শক্তভাব প্রতিরোধ।
  3. চলাচলের ক্ষমতা ধরে রাখা এবং সহায়ক যন্ত্র ব্যবহার করতে সাহায্য করা।
  4. ফুসফুস এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের কার্যকারিতা উন্নত করা।

DMD রোগীদের জন্য ফিজিওথেরাপির পদ্ধতি:

1. স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ:

  • লক্ষ্য: পেশির টান কমানো এবং নমনীয়তা বৃদ্ধি করা।
  • পদ্ধতি:
    • প্রতিদিন পায়ের পেশি, হাত এবং পিঠের পেশিগুলোর স্ট্রেচিং।
    • বিশেষ করে ক্যালফ মাংসপেশি এবং অ্যাকিলিস টেন্ডন স্ট্রেচিং।

2. রেঞ্জ অফ মোশন (ROM) এক্সারসাইজ:

  • লক্ষ্য: জয়েন্টের গতিশীলতা বজায় রাখা।
  • পদ্ধতি:
    • সক্রিয় (Active) বা প্যাসিভ (Passive) মুভমেন্টের মাধ্যমে জয়েন্টগুলো নাড়ানো।

3. শক্তি বৃদ্ধির ব্যায়াম (Strengthening Exercises):

  • সতর্কতা: DMD রোগীদের জন্য ভারী ব্যায়াম করা উচিত নয় কারণ এটি পেশির ক্ষতি বাড়াতে পারে।
  • কৌশল:
    • হালকা ওজন ব্যবহার।
    • হালকা রেজিস্ট্যান্স ব্যান্ড দিয়ে ব্যায়াম।

4. শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়াম (Respiratory Exercises):

  • লক্ষ্য: ফুসফুসের কার্যকারিতা উন্নত করা।
  • পদ্ধতি:
    • গভীর শ্বাস নেওয়া এবং শ্বাস ছাড়ার ব্যায়াম।
    • বেলুন ফোলানোর মত কার্যকলাপ।
    • কফ পরিষ্কার করার জন্য কৌশল শেখানো।

5. হুইলচেয়ার বা ব্রেসের ব্যবহার:

  • লক্ষ্য: চলাফেরার সহায়ক যন্ত্র ব্যবহার করে রোগীর স্বাধীনতা বাড়ানো।
  • উপায়:
    • ব্যাক ব্রেস এবং অ্যান্কল-ফুট অরথোসিস (AFO) ব্যবহারে পেশি ও হাড়ের সাপোর্ট।
    • বৈদ্যুতিক হুইলচেয়ারের ব্যবহার।

6. জলচিকিৎসা (Hydrotherapy):

  • উপকারিতা: পানির মধ্য দিয়ে ব্যায়াম করলে শরীরের ওজন কমে যায় এবং সহজে চলাচল করা যায়।

7. ফাংশনাল ট্রেনিং (Functional Training):

  • লক্ষ্য: দৈনন্দিন কাজ সহজ করা।
  • কৌশল:
    • বসা থেকে দাঁড়ানোর প্রশিক্ষণ।
    • সিঁড়ি ওঠানামার প্রশিক্ষণ।

DMD রোগীর জন্য ফিজিওথেরাপির বিশেষ দিক:

  1. সতর্কতা:
    • অতিরিক্ত ক্লান্তি বা ব্যায়ামের ফলে পেশির ক্ষতি হতে পারে।
    • ব্যথা হলে ব্যায়াম বন্ধ করতে হবে।
  2. ধীরে ধীরে অগ্রগতি: ধাপে ধাপে ব্যায়ামের মাত্রা বাড়ানো উচিত।
  3. পরিবারের ভূমিকা:
    • রোগীর দৈনন্দিন রুটিনে ফিজিওথেরাপি অন্তর্ভুক্ত করা।
    • থেরাপিস্টের নির্দেশ অনুযায়ী বাড়িতে নিয়মিত অনুশীলন করানো।

ফিজিওথেরাপির উপকারিতা:

  1. রোগীর শারীরিক কার্যক্ষমতা দীর্ঘ সময়ের জন্য ধরে রাখা।
  2. পেশির শক্তভাব এবং জয়েন্টের সমস্যা কমানো।
  3. মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি।
  4. ফুসফুসের সংক্রমণ ও অন্যান্য জটিলতা প্রতিরোধ।

উপসংহার:

ডুচেন মস্কুলার ডিসট্রফি রোগীর জন্য ফিজিওথেরাপি একটি দীর্ঘমেয়াদী সমাধান। এটি রোগীর দৈনন্দিন জীবন সহজ করতে এবং তার শারীরিক সক্ষমতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। নিয়মিত থেরাপি এবং পরিবারের সক্রিয় সহযোগিতার মাধ্যমে DMD রোগীরা একটি উন্নত মানের জীবন যাপন করতে পারে।

যেসকল শারীরিক সমস্যার জন্য আমরা ফিজিওথেরাপি দিয়ে থাকি

সকল ফিজিওথেরাপি দিয়ে থাকি

ইউনিক ফিজিওথেরাপি

আপনার স্বাস্থ্য আমাদের অগ্রাধিকার

আসসালামু আলাইকুম, ইউনিক ফিজিওথেরাপি, রিহ্যাবিলিটেশন এবং হিজামা সেন্টারে স্বাগতম। আমরা কিভাবে আপনাকে সাহায্য করতে পারি?

Powered by WpChatPlugins